• শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ১০:৫৯ অপরাহ্ন
  • [gtranslate]

দিনাজপুরে পাঙাশ মাছের চাহিদা কম থাকলেও দামে বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক, দিনাজপুর: / ১০৩ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০২৫
ছবি: কৃষিতে বাংলা

বেশি কাঁটা থাকার অজুহাতে অনেকেই মাছ খেতে অপছন্দ করে থাকি। যদি পাঙাশ মাছের কথা আসে, তখন একটু ভেবে নেয়া যেতে পারে খাবো কি খাবো না। কারণ পাঙাশ মাছের আঁশে কাঁটা থাকে না। তারপরও এই মাছটির প্রতি দিনাজপুরের মানুষদের একটু হলেও চাহিদা কম আছে। এরপরও বাজারে পাঙাশ মাছের পসড়া সাজিয়ে বিক্রি করতে দেখা যায় ব্যবসায়ীদের। আবার অনেকে সাইজভেদে দাম জেনেশুনে কিনছেন।

দিনাজপুরে সাধারণত পুকুরে চাষ করা পাঙাশ মাছ কিনতে পাওয়া যায়। বিশেষ করে দেশব্যাপী সমাদৃত ময়মনসিংহের আবাদী পাঙাশ মাছ দিনাজপুরের বাজারগুলোতে বিক্রয় করতে দেখা গেছে। এছাড়াও জয়পুরহাট এলাকার চাষ করা পাঙাশও মাঝে মধ্যে পাওয়া যায়। দিনাজপুরের স্থানীয় পুকুরের আবাদী পাঙাশ মাছ বেশি বিক্রয় করছেন মাছ ব্যবসায়ীরা। যদিও মাঝে মধ্যে পাবনা থেকে নদীর আহরণকৃত কিছু বড় সাইজের পাঙাশ মাছ দিনাজপুরের সবচেয়ে বড় মাছের আড়ত বাহাদুর বাজারে আসতে দেখা গেছে। তবে পুকুরের আবাদী বড় সাইজের পাঙাশ কিছুদিন ফ্রিজে রেখে নদীর কথা বলে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে কিছু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে দিনাজপুরের সর্ববৃহৎ পাইকারী ও খুচরা মাছ বিক্রয়স্থল বাহাদুর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, আজ আড়তগুলোতে অন্যান্য মাছের পাশাপাশি পাঙাশ মাছও পাইকারী দরে কিনছেন খুচরা বিক্রেতারা। তবে নদীর নয়, ময়মনসিংহ থেকে আসা পুকুরে আবাদী পাঙাশ। সাইজভেদে ছোটগুলো ১ থেকে ২ কেজি ওজনের পাঙাশ বিক্রয় হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা দরে আর ৩ থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ কেজি ওজনের পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা দরে। আজ পাবনা থেকে নদীর কোন পাঙাশ দিনাজপুরের এই আড়তে আসেনি বলে জানান আড়তদারেরা।

বাহাদুর বাজারের একজন বড় মাছের আড়তদার জোবাইদুর রহমান কৃষিতে বাংলাকে জানান, আমরা পাঙাশ মাছের বড় চালান পেয়ে থাকি ময়মনসিংহ থেকে। পুকুরে আবাদ হলেও মাছটি সুস্বাদু হওয়ায় আর রান্নার পরে গন্ধ থাকে না বিধায় ঐ এলাকার মাছটিই বেশি চলে দিনাজপুরে। তবে মাঝে মধ্যে পাবনা থেকে নদীর কিছু বড় সাইজের পাঙাশ মাছের চালান আসে। যা গত দেড় মাস আগে কিছু পেয়েছিলাম। দাম বেশি হওয়ার কারণে কাটতি কম বলে জানান তিনি। তিনি জানান, সবশেষ এই নদীর পাঙাশ প্রায় ৮-১০ কেজি ওজনের পাইকারী বিক্রি হয়েছিল ৬৫০ টাকা কেজি দরে আর খুচরা বিক্রয় করতে দেখা গেছে ১ হাজার থেকে ১১শ টাকা দরে কেজিতে।

বাজারের খুচরা পাঙাশ মাছ বিক্রেতা মো. সাগর বাবু কৃষিতে বাংলাকে জানান, আমার কাছে শুধুই ময়মনসিংহ ও জয়পুরহাট থেকে আসা পুকুরে আবাদ করা পাঙাশ পাওয়া যায়। স্থানীয় আবাদী পাঙাশও রয়েছে। এর বাইরে নদীর পাঙাশ পাই না, তাই বিক্রিও করি না বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, আজ শুধুই ময়মনসিংহের পাঙাশ রয়েছে। আকারভেদে ১ থেকে ২ কেজি ওজনের পাঙাশ বিক্রয় করছি ১৭০ টাকা দরে আর ৩ থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ কেজি ওজনের পাঙাশ ২৩০ টাকা দরে। তবে তিনি জানান, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পুকুরের পাঙাশ কিছুদিন ডিপফ্রিজে রেখে মাছটি সাদা করে বিক্রি করেন নদীর কথা বলে।

এদিকে, শহরের বিভিন্ন এলাকায় ফেরি করে মাছ বিক্রেতা মো. ইয়াসিন আলী কৃষিতে বাংলাকে জানান, দেশি, সামুদ্রিক ও পুকুরে আবাদী মাছ বাহাদুর বাজারের আড়ত থেকে কিনে শহরের ঈদগাহ আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন মহল্লায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিক্রি করছি প্রায় প্রতিদিনই। এর মধ্যে পাঙাশ মাছও বিক্রি করি। সরাসরি স্থানীয় পুকুর থেকে নিয়ে আবার আড়ত থেকে ময়মনসিংহ থেকে আসা পাঙাশও নিয়ে থাকি। চাহিদা কম থাকায় মাঝে মধ্যে বিক্রয় করতে হয় এই পাঙাশ বলে জানান তিনি।

বাহাদুর বাজারে মাছের খুচরা ব্যবসায়ীর কাছে নদীর পাঙাশ কেনা একজন ভোক্তা মো. নুর ইসলাম কৃষিতে বাংলাকে জানান, আমি প্রায় দেড় মাস আগে বাজার থেকে খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে নদীর একটি বড় ওজনের পাঙাশ মাছ কিনেছিলাম ১১শ টাকা কেজি দরে। প্রায় ১০ কেজি ওজনের মাছটি থেকে ১ কেজি নিয়েছিলাম। পরে এই নদীর পাঙাশ আজ পর্যন্ত বাজারে গিয়ে পাইনি বলে জানান।

Facebook Comments Box


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
bdit.com.bd
error: Content is protected !!