কৃষক ঘরের সন্তান মাহবুব হোসেন। বয়স সবে মাত্র ৩২ বছর। মাদ্রাসায় মাস্টার্স (কামিল) পড়ছেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি স্বাধীনতার পর থেকে দাদার রেখে যাওয়া বাবার পাশাপাশি তিনিও পান চাষ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। লেখাপড়া শেষ করে এই পান চাষ নিয়েই জীবনের বাকি সময়টুকু ব্যস্ত থাকতে চায় সে। এই পান বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে দিনাজপুরকে নতুন করে পরিচিতি এনে দেওয়ারও ইচ্ছা রয়েছে মাহবুবের।
দিনাজপুর সদর উপজেলার শেখপুরা ইউনিয়নের উত্তর জয়দেবপুর গ্রামের ডাক্তারপাড়ার বাসিন্দা সোলেমান আলীর ছোট ছেলে মাহবুব। বড় ভাই কৃষি কাজ করেন আর দুই বোনের বিয়ে হয়ে শ্বশুড় বাড়িতে সংসার করছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, উত্তর জয়দেবপুর গ্রামের ডাক্তার পাড়ায় ছয়টি পানের বরজের মধ্যে মাহবুবের পানের বরজটি সবচেয়ে বড়। লাভজনক হওয়ায় এই এলাকায় পানবরজ তৈরী করছেন অনেকেই। অন্য আবাদের চেয়ে পান বরজে তুলনামূলক লাভ বেশি।
পান চাষী মাহবুব হোসেন কৃষিতে বাংলাকে বলেন, তার দাদা বাড়ির পার্শ্বে ২৪ শতক জমিতে স্বাধীনতার পর থেকে পানের বরজ তৈরী করে চাষাবাদ করছিলেন। দাদার মৃত্যুর পর এই পান বরজের হাল ধরেন তার বাবা, সাথে ছোটবেলা থেকেই সহযোগিতা করে আসছেন তিনি। বড় হয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি পান চাষের হাল ধরেন তিনি।
তিনি বলেন, রাজশাহী জাতের মিষ্ট এই পানের বরজ থেকে প্রতি বছর ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা আয় হয়। তবে বছর প্রতি এতে খরচও হয় প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। খরচ হয় সাধারণত পানের বরজ রক্ষণাবেক্ষণে, বিশেষ করে খড় আর বাঁশের চাহিদা মেটাতে। এছাড়াও সারসহ আনুষঙ্গিক খাদ্য যোগান পানের বরজ সর্বদা তাজা রাখতে খরচের একটা অংশবিশেষ।
মাহবুব হোসেন আরও বলেন, পানের বরজ থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১০ হাজার পান উত্তোলন করা হয়। এই পান একজন পাইকারী ব্যবসায়ীর মাধ্যমে জেলার অনেক উপজেলার পান বিক্রেতাদের মাঝে বিক্রয় করা হচ্ছে। যদিও রাজশাহীর পান দিনাজপুরের বাজার দখল করে আছে। দামে কম পেলেও উৎপাদন অনুযায়ী লোকাল পানের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে বলে তিনি জানান।
সরকারি সহায়তা পেলে এই পানের বরজের পরিধি তার আরও বাড়ানোর আকাঙ্খা রয়েছে। এই পান বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে দিনাজপুরকে নতুন করে পরিচিতি এনে দেওয়ারও ইচ্ছা আছে তার। তবে পড়ালেখা শেষ করে এই পান চাষ নিয়েই জীবনের বাকি সময়টুকু ব্যস্ত থাকতে চায় মাহবুব হোসেন।