রাজধানীর ভবনসমূহে ছাদবাগান এবং খালি জায়গায় সবুজায়নের মাধ্যমে নগরের তাপমাত্রা হ্রাস ও পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সোমবার (সিরডাপ মিলনায়তনে) অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ৪র্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের শেষ দিনে ‘পরিবর্তিত জলবায়ু পরিস্থিতিতে নগর-পেরি নগর কৃষি’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তারা এ আহ্বান জানান।
তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল, “নগর, অঞ্চল এবং গ্রামীণ এলাকার বৈষম্যহীন উন্নয়নে স্থানিক পরিকল্পনা”।
সেশনটির সভাপতিত্ব করেন বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)-এর চেয়ারম্যান আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার। তিনি বলেন, “শহরের ক্রমবর্ধমান ঘনত্ব এবং কংক্রিটকরণের ফলে তাপমাত্রা দিন দিন বাড়ছে। ছাদবাগান ও সবুজায়নের মাধ্যমে নগর তাপমাত্রা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এ জন্য নগর কৃষিকে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।”
তিনি জানান, ধানমন্ডি, লালমাটিয়া, উত্তরাসহ অনেক এলাকায় ছাদবাগান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে অনেক ভবনের মালিক ছাদ নষ্ট হয়ে যাবে এই আশঙ্কায় এতে অনাগ্রহী। অথচ বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে ছাদবাগান তৈরি করা সম্ভব, যা বরং তাপ কমাতে সহায়ক।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ব্র্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির প্রধান আবু সাদাত মনিরুজ্জামান খান বলেন, নগর কৃষি শুধু পরিবেশবান্ধব নয়, এটি কর্মসংস্থান ও ব্র্যান্ড ভ্যালু বৃদ্ধির মাধ্যমও হতে পারে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, স্বপ্নধারা হাউজিং প্রকল্পে সবজি চাষ করে প্রায় ১২০০ মানুষকে কর্মসংস্থান দেওয়া হয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানটির সামাজিক মূল্যবোধও বৃদ্ধি করেছে।
আইইউবির অধ্যাপক ড. হাফিজুর রহমান বলেন, “ছাদবাগানকে শুধু নান্দনিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং তাপমাত্রা হ্রাস এবং পরিবেশ সংরক্ষণের উপযোগী একটি পদ্ধতি হিসেবে গণ্য করা উচিত।”
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. মো. সাইফুর রহমান জানান, সরকার নগর বন ও সবুজায়ন কার্যক্রমে জোর দিচ্ছে এবং তা বাস্তবায়নে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
সম্মেলনের অন্য একটি সেশনে দেশের জলাধার ও সবুজ রক্ষা বিষয়ে ‘ভবিষ্যৎ-প্রমাণ শহরের জন্য জল ব্যবস্থাপনাকে একীভূত করার জন্য ল্যান্ডস্কেপ পদ্ধতি’ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেন বেঙ্গল ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. কাজী খালিদ আশরাফ, ডেলফা ইউনিভার্সিটির ড. ক্রিস জেভেনবার্গেন এবং ভূমিজ’র প্রধান নির্বাহী ফারহানা রশিদ।