দিনাজপুরের কাহারোলে উচ্চফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ বাংলাদেশে পরিবর্তিত জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলা করে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে ধানের চাহিদা মেটানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কৃষি জমির পরিমাণ, উর্বরতা, ভূ-গর্ভস্থ পানি ও কৃষি শ্রমিক ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ধান উৎপাদনের আধুনিক চাষাবাদ এবং টেকসই প্রক্রিয়ায় সম্প্রসারণের মাধ্যমেই খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন করা সম্ভব।
পার্টনার প্রোগ্রামের আওতায় বারিধান- ১০৩ প্রথমবারের মতো কাহারোল উপজেলায় চাষাবাদ শুরু হয়েছে। বিনামূল্যে ধান বীজ, সার, কীটনাশক এবং বীজ সংরক্ষণ ড্রাম এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উদ্যোক্তা ডাবোর ইউনিয়নের কৃষক মো: লিটন আহমেদসহ দুইজন কৃষক ব্রি ধান ১০৩ এর কমিউনিটি বীজ উৎপাদন শীর্ষক ২ একরের প্রদর্শনী পান। তিনি পার্টনার মাঠ স্কুল থেকে প্রশিক্ষণও নিয়েছেন এবং আধুনিক চাষাবাদ, পানি, সার ব্যবস্থাপনা, আধুনিক জাতের নির্বাচন ও চাষাবাদ সম্পর্কে অনেক জ্ঞান লাভ করেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মল্লিকা রানী সেহান বীশ জানান, কৃষি বিভাগ সকল প্রকার সহযোগিতা ও নির্দেশনায় আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির মাধ্যমে তিনি মাত্র ১২৯ দিনে ফসল সংগ্রহ করেত সমর্থ হন। অন্য আমন জাতগুলোর তুলনায় এই জাতটি আগাম এবং ফলন বেশি। তিনি ২ একর জমিতে ১৫০ মন ধান পেয়েছেন। তিনি ৫০ মন ধানের বীজ ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে ৮০,০০০ টাকা মুনাফা করেন এবং ১৩০ মন ধান ৩২ টাকা দরে ১,৬৬,৪০০ টাকা মুনাফা করেন। তিনি ১৭.৫ মন বীজ প্রকল্প হতে সরবরাহকৃত ১০টি ড্রামে সংরক্ষণ করেন।
ডাবোর ইউনিয়নের স্থানীয় কৃষক মানষ রায় জানান, তিনি ব্রিধান-১০৩ জাতটি স্থানীয় কৃষক লিটনের জমিতে প্রথম দেখেন। জাতটি তার কাছে খুব ভালো মনে হয়েছে। আর জাতটির ফলনও ভালো। তিনি আরও বলেন, আমি ৫০ কেজি বীজ নিয়েছি এবং নিজে চাষাবাদ করব।
অন্যদিকে কৃষক লিটন জানান, আমি ১৭.৫ মন ব্রিধান-১০৩ সংরক্ষণ করেছি এবং আমি এই জাতটি পরবর্তী আমন মৌসুমে আবারও চাষাবাদ করব এবং বাকি বীজগুলো পার্টনার ফিল্ড স্কুলের সদস্যদের বিনা মূল্যে সরবরাহ করব। যদি কৃষকরা উন্নত জাত চাষাবাদ করে লাভবান হয় তাহলে তারা আরও বেশি উৎসাহিত হবেন এবং তাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন অর্জিত হবে।